জরুরী ঘোষণা :
সৃজনশীল পুস্তুক প্রকাশনায় ও বিশ্বস্ততা আমাদের মূলধন। আপনার পান্ডুলিপি পাঠাতে বুলবুল প্রকাশনীতে যোগাযোগ করুন । মোবাইলঃ 01725134446
ছেলে এখন কোটিপতি

ছেলে এখন কোটিপতি

ছেলে এখন কোটিপতি

মোঃ বুলবুল হোসেন 

কাজের ছেলে সুমন এসে বলল, ভাবী একটা বুড়ো লোক এসেছে। বলছে মিজান ভাইরের সাথে দরকার আছে। লোকটা কে, কোথা থেকে এসেছে কিছু বলছে তোকে । বুড়োলোকটি শুধু বলল গ্রাম থেকে এসেছি । মিজানের সাথে দেখা করার দরকার । দরকার তো আমি জানি। যতসব ফালতু লোক গুলো আসে যখন তখন। তোদের ভাই কে ইনিয়ে বিনিয়ে দুঃখের কথা বলবে। সেও গলে যাবে আর কিছু টাকা খসবে আমাদের। এক্ষণি লোক টাকে বাড়ি থেকে বিদায় করে দে।আর শোন তোর মিজান ভাই এর কানে যেন এ’সব কথা না যায়। আজ আমার একমাত্র ছেলে  রাকিব এর জন্মদিন। বাড়িতে সব লোকজন ভরে যাবে কিছুক্ষণ পরেই । এর মধ্যে একফাঁকে পার্লারে গিয়ে একটু তৈরী হয়ে আসব ভাবছি। তা আর হবে না মনে হয়। একটু পরেই সুমন  ফিরে এল আবার, পিছন পিছন এক গেঁয়ো বুড়ো।

ঝামেলায় পড়ে গেলাম এই বুড়ো লোকটা নিয়ে কিছুতেই ছাড়ছে না । সুমনের  কথা থামিয়ে দিয়ে যে মাত্র বলতে যাবে। বুড়ো লোকটা বলে বৌমা তুমি আমাকে চিনবে না আমি মিজানের,,,,ওমনি বৌমা বুড়ো লোকটার কথা থামিয়ে দিয়ে বলে, আপনি কে তা আমি জানতে চাইনা, আমার বাড়ীতে আজ একটা অনুষ্ঠান আছে। আমার সময় নেই আপনার বাজে কথা শোনার। টাকা চাইতে এসেছেন তো! ঐরকম অনেকেই আসে আমার স্বামীর গ্রামের সম্পর্ক ধরে। আপনি এখন আসুন। আমার স্বামী বাড়ীতে নেই।

বুড়ো লোকটা বলল,

অনেকদূর থেকে এসেছি মা। আমার বিশেষ দরকার। তাছাড়া বুড়ো হয়েছি, পথঘাট ঠিকঠাক মত চিনতে পারব না  রাতে। মিজানের সাথে কাজের কথা সেরে , কাল সকাল সকাল চলে যাব। নাছোড়বান্দা বুড়ো তো, সুমন কে বললাম একটা কাজ কর। তোর পাশের রুমটাতে আজকের রাতটা থাকতে দে একে। কাল দেখা যাবে। দারুণ হৈ- হুল্লোড় হ’ল পার্টিতে।  সব পরিচিত আপনজনরা এসেছিল। অনেক দামী দামী গিফট পেল রাকিব। এরপর নদী রাতে ঘুমাতে গেল। নদী হল মিজানের বউ। সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরিই হয়ে গেল। নদী বল,অবশ্য অসুবিধে নেই তাতে। আজ তো ছুটির দিন। এদিকে বুড়ো লোকটার কোন খোঁজ খবর খবর রাখেনি নদী। রাহেলা চা নিয়ে এসে নদীর হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিল। কি এটা?ঐ বুড়ো ভদ্রলোক দিয়ে গেছেন ভাবী। বলেছেন, এটা আপনাকে দিয়ে দিতে। কি আছে এতে দেখি তো খুলে।

স্নেহের বৌমা

তুমি হলে আমার বড় ভাই আশিকের ছেলের মিজানের বউ। মিজানের বাবা-মা অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। মিজানের তখন এক বৎসর বয়স। আমি আর আমার স্ত্রী জুলেখা ছেলের মত মিজানকে লালন পালন করি। গ্রামের পড়াশোনা শেষ করে ঢাকা শহরে হোস্টেলে রেখে মিজানকে লেখাপড়া করাতাম। মাঝেমধ্যে আমি টাকা পয়সা নিয়ে আসতাম। আস্তে আস্তে আমার বয়স হতে লাগলো আর আমি টাকা কুরিয়ার মাধ্যমে পাঠায় দিতে থাকি। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর মিজান আমাদের তেমন কোন খোঁজ খবর রাখতো না। আমরা চিঠি  দশটা দিলে দুইটার উত্তর দিত। এরপর হঠাৎ একদিন চিঠি দিলো মিজান  বিয়ে করেছে তোমাকে । তারপর অনেক চিঠি দিয়েছি হঠাৎ একদিন মিজান বলল তাদের একটি ছেলে হয়েছে। কাজের চাপে আসতে পারিনি। আমি জানি এর অফিসের ঠিকানাটা জানতাম তাই অফিসে গিয়ে দেখি মিজান আজকে অফিসে যায়নি। তাই অফিস থেকে বাসার ঠিকানাটা নিয়ে সরাসরি তোমাদের বাসায় চলে আসি। বিশ্বাস করো বৌমা আমি আসতাম না আমার বয়স হয়ে গেছে। আমাদের যে জমির ছিল তাই এখন চাষবাস করতে পারিনা।  জমিগুলো বিক্রি করে বিশ লক্ষ টাকা একটা চেক নিয়ে আসছি । তোমার কাকি অনেক অসুস্থ সব সময় মিজানের কথা বলে। মিজানকে একবার দেখতে চায়। কি আর করার সে ভাগ্য আমাদের হলো না । আমি তোমার কাকি মাকে বলবো মিজান বিদেশে চলে গেছে । তারা দেশে থাকে না হয়তো কান্নাকাটি করবে তারপর আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

ReplyForwardAdd reaction

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © ২০২৪ BanglarKobi.com
Desing & Developed BY LIONBD.COM