রোজ বিকালের মতো আজো করিম খেলার জন্য মাঠে চলে যায়। বন্ধুদের সাথে আড্ডা হইচই করে দিন চলে যায়। একদিন সকাল বেলায় করিমের মা করিম কে ডেকে বলল। স্কুল ছুটি দিয়েছে, অনেকদিন হলো তুই মামার বাড়ি যাস না। তোর মামা খবর পাঠিয়েছে একটু ঘুরে আয়। করিম ভাবলো মন্দ হয়না, সময় যাচ্ছে না, একটু নানার বাড়ি ঘুরে আসি।করিমের নানার বাড়ি অচিনপুর গ্রামে। করিম তার মা কাছ থেকে। অনুমতি নিয়ে মামার বাড়ির দিকে রওনা দেয়।
করিম সকালের দিকে রওনা দেয়। তখন গ্রামে রাস্তাঘাট সেরকম ভাল ছিল না। বৃষ্টি পড়লে রাস্তায় গিরু সমান কাঁদা জমে যায়। তবে বৃষ্টি না পড়লে কোন সমস্যা হয়না রাস্তায়। করিম রাস্তা দিয়ে যাইতেছে। দুপাশে ধানক্ষেত আঁকাবাঁকা মেঠো পথ। দেখতে যেন এক মনোরম দৃশ্য। করিম ভাবতে ছিল।কতদিন পরে নানার বাড়ি যাইতেছি । রাস্তার দু’পাশে কাশফুল যেন খেলা করতেছে। এমন সময় করিমের চোখে পড়ল। একটা মেয়ে আকাশী কালার শাড়ি পড়ে, কপালে লাল টিপ,যেন আকাশের রং এর সাথে মিশে গিয়াছে। দেখতে যেন ডানা কাটা পরি। মেয়েটি রাস্তার পাশে কাশ ফুল তুলতেছে।করিম চলার গতি থামিয়ে দেয়। হঠাৎ করে মেয়েটির চোখ করিমের চোখের সাথে পড়ে যায়। মেয়েটি করিমকে দেখে মুচকি হেসে বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করে।
করিম মেয়েটির পিছনে পিছনে আসতে থাকে। একপর্যায়ে মেয়েটি বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। করিম তার মামার বাড়ির কাছাকাছি এসে গিয়েছে। হয়তো আর দশ পনেরো মিনিট সময় লাগবে। যদিও অচিনপুর গ্রাম টা অনেক বড়। মেয়েটির বাড়ি গ্রামের শুরুতে করিমের নানার বাড়ি গ্রামের মাঝখানে মধ্যপাড়া বলে ডাকে সবাই। একপা দুপা করে করিম নানির বাড়ি চলে আসে। করিম কে দেখে নানি তো বেজায় খুশি। কতদিন পরে নানাভাই তুমি আমার বাড়িতে এসেছো। আসতে রাস্তায় তো কোনো সমস্যা হয়নি তোমার নানা ভাই। করিম বলল না নানী রাস্তায় আমার কোনো সমস্যা হয়নি। একে একে বাড়ির সবাই এসে পড়লো মামা মামী নানা সবাই করিমকে আদর করতে শুরু করল।
মামী এসে হাত মুখ ধোয়ার জন্য পানি দিল। এরপর ঘরে নিয়ে করিম কে খাবার দেওয়া হল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর কিছুক্ষণ পরে নানা এসে বলল। চলনা নানা ভাই আমরা বাজার দিয়ে ঘুরে আসি। করিম মাথা দিয়ে হে করে। নানার সাথে বাজারের দিকে রওনা দিল। কিন্তু করিমের মাথায় শুধু বারবার মেয়েটির কথাই মনে পরতে থাকে। বাজার পাওয়ার আগে গুদারাঘাট পাড়ি দিতে হয়। করিম আর তার নানা নৌকাতে উঠে পড়ে। হঠাৎ করে করিমের কানে বেজে ওঠে। নানা কে কেউ যেন বলছে মাস্টারমশাই বাড়িতে আছে। নানা বলল বাড়িতে আছে। শাপলার পরীক্ষা সামনে অংক নাকি কম বুঝে। তাই মাস্টারের কাছে যাবে। এই কারণে আপনাকে জিগাইলাম। নানা বললো বেশ তো পাঠিয়ে দিন শাপলা কে। করিমের মামা আবার হাইস্কুলের টিচার। করিমের মামা অংকতে বেশ পারদর্শী। এরপর গুদারাঘাট পার হয়ে নানা নাতি বাজার করে। বাড়ির দিকে রওনা দেয়। নানা প্রশ্ন করে। করিম তোমার আম্মু কেমন আছে। করিম বলল নানা বাড়ির সবাই ভালো আছে। করিম বাড়িতে এসে সবার সাথে গল্প শুরু করে দেয়। গল্প করতে করতে এক পর্যায় নানি বলে, তোমার মামার রুম থেকে একটা কয়েল নিয়ে আসো। নানীর কথা মত মামা রুমে গিয়ে করিম যা দেখল দেখে করিমের চোখ কপালে উঠে যায়।
করিম দেখল আসার সময় যে মেয়েটি কাশফুল তুলতে ছিল। সেই মেয়েটির টেবিলে বসা আছে। করিম মেয়েটিকে দেখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। করিম মনে মনে বলতে লাগল যেমন সুন্দর মেয়ে তেমন সুন্দর তার নাম। করিম কে দেখে মেয়েটি বললো, এমন ভাবে তাকাচ্ছেন কেন আমার বুঝি লজ্জা করে না। এমন সময় মামা এসে পড়ল।মামা বলল কি করিম কিছু বলবে। হে মামা নানি একটি কয়েল নিতে বলেছে। আমি কয়েল নেওয়ার জন্য আসছি লাম। মামা একটি কয়েল বাহির করে দেয়।করিম নিয়ে নানি রুমে চলে যায়। শাপলা পড়াশোনা শেষ করে। যখন চলে যাচ্ছিল তখন করিম বলল বিকাল বেলায় কাশফুল আস্তে করে। মেয়েটি মুচকি হেসে চলে গেল। করিম এ কথাটা বলার জন্য অনেকক্ষণ যাবৎ বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিল। এমন সময় মামীর গলা শুনতে পেলো করিমকে ডাকতেছে। করিম রুমে চলে গেল সবার সাথে রাতের খাবার শেষ করে থাকার রুমে চলে গেল। করিমের প্রথম দেখাতেই মেয়েটিকে ভালো লেগেছে। করিম মেয়েটিকে ভালোবাসে এই কথাটা কিভাবে বলবে রাত্রে ভাবতে ছিল। একপর্যায়ে করিম ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা সেরে। করিম অপেক্ষা করতে থাকে কখন বিকাল হবে। করিম বিকাল বেলায় চলে যায়। আঁকা বাঁকা মেঠো পথ দিয়ে সেই কাশফুলের কাছে।
করিম কাসফুলের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। হঠাৎ চোখে পড়ে করিমের কে যেন হলুদ জামা পড়ে কাশফুলের দিকে আসতেছে। মেয়েটি যখন কাছাকাছি এসে পরল করিম নিজেকে বিশ্বাস করতে পারতেছেনা। করিম ভাবতে ছিল হয়তো শাপলা আসবেনা। শাপলা এসেছে পরছে সামনে। শাপলা করিমকে জিগায় আপনার নাম কি? করিম বললো আমার নাম করিম। এবার বলেন কেন আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। করিম বলে ফেলল শাপলা আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। শাপলার মুখ থেকে কোন কথা আসতেছে না। শাপলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে। করিম ভয় পেয়ে যায়। করিম বললো আমি কি কোন ভুল করেছি।আমি তো শুধু তোমাকে ভালবাসতে চাইছি। শাপলা বলল না এটা আসলেই সুখের কান্না দুঃখের না। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি প্রথম দেখাতেই কিন্তু আমি তোমাকে বলতে পারি নাই। দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছিল তারা। একপর্যায়ে করিম বলল ছাড়ো লোকজন এসে পড়বে দেখলে তারা কি বলবে।
এরপর দুজন দুজনাকে সামলিয়ে নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। করিম মনে মনে ভাবতে ছিল। জীবনের সবচাইতে বড় সুখ আজ পেলাম। এভাবে দুজনের প্রেম চলতে থাকে। একদিন শাপলা এসে বললো চলো আমরা বিলের ধারে যাব। জোসনা রাত্রে আজকে ঘুরতে । করিম শাপলার কথা শুনে তো মহাখুশী। করিম অপেক্ষা করতে থাকে।কখন রাত্রি হবে। রাত্রিবেলায় করিম শাপলা কে নিয়ে বিলের দিকে রওনা দেয়। করিম শাপলার হাত ধরে জোসনা রাতে ঘুরতে থাকে বিলের মাঝখানে। হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে তারা একটি জায়গায় এসে বসে পড়ে। দুজন দুজনাকে নিয়ে মনের মাঝে কত স্বপ্ন দেখে তারা। গল্প করতে করতে এক পর্যায় রাত্রি শেষ হয়ে যার।
এরপর তারা দুজন তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসে। একদিন বিকাল বেলায় করিম শাপলা হাটতেছিল। দূর থেকে শাপলার ভাই ওদেরকে দেখে ফেলে। শাপলার ভাই এসে শাপলাকে নিয়ে যায়। এমন করিমকে হুমকি দিয়ে যায়। করিম তার নানা কে কিছু বলেনি। পরদিন সকালে নাস্তা সেরে করিম বাজারের দিকে রওনা দেয়। মাঝ রাস্তার যাইতেই শাপলার ভাই করিমকে মারার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। করিম ও শাপলার ভাই দুজনে মারামারি করে এক পর্যায়ে রক্তাক্ত হয়ে যায় দুজন। শাপলার ভাই বেশি আঘাত পায়। এর জন্য করিমকে বেশ কিছুদিন জেল খাটতে হয়। জেল খাটতে হয় এই কারণে। শাপলা থানায় গিয়ে। নারী নির্যাতনের মামলা করে কারণ শাপ্লার ভাইয়ের মাথায় আঘাত লেগেছে বলে।এরপর করিম ফেরত আসার পর শাপলার সামনে দাঁড়ালে। শাপলা করিমকে অনেক গালাগালি করে। করিম শাপলার জন্য পাগল হয়ে যায়। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকে।
লেখক প্রোফাইল:

- আমি শৈশব থেকে বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের টাংগাইল জেলার কালিহাতী থানার ঘুনিপাড়া গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বেড়ে উঠি। পিতার নামঃ- মোঃ ফ্জলুল হক। মাতাঃ- মোসাঃ মনোয়ারা বেগম। Mail:-bulbulshake36@gmail.com
এই লেখকের নতুন লেখা:
ছড়া-কবিতা2021.01.26খোকা
ছড়া-কবিতা2021.01.24বাঁচার অধিকার
ছড়া-কবিতা2021.01.21সূর্য মামা
জীবনমুখী কবিতা2021.01.20উলু বনে পদ্ম
I’ve been exploring for a little for any high-quality articles or weblog posts in this sort of space . Exploring in Yahoo I finally stumbled upon this web site. Reading this information So i am satisfied to express that I’ve a very good uncanny feeling I came upon exactly what I needed. I most indisputably will make sure to don?t fail to remember this web site and give it a glance regularly.|
Heya i am for the first time here. I found this board and I find It really useful & it helped me out much. I hope to give something back and aid others like you helped me.|
This site certainly has all of the info I needed concerning this subject and didn’t know who to ask. |
I know this if off topic but I’m looking into starting my own weblog and was wondering what all is needed to get set up? I’m assuming having a blog like yours would cost a pretty penny? I’m not very internet smart so I’m not 100% positive. Any recommendations or advice would be greatly appreciated. Thanks|
Hi there, just became alert to your blog through Google, and found that it is truly informative. I am going to watch out for brussels. I will appreciate if you continue this in future. Lots of people will be benefited from your writing. Cheers!|
I simply couldn’t depart your web site before suggesting that I really loved the standard info a person provide to your visitors? Is gonna be back steadily to inspect new posts|
I feel this is one of the most significant info for me. And i am happy reading your article. But wanna commentary on some basic issues, The website style is wonderful, the articles is truly great : D. Just right job, cheers|